রূপগঞ্জে কারখানায় আগুনে মৃত বেড়ে ৪, আহত ২৫

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুড বেভারেজ কোম্পানির কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় চার জন মারা গেছেন। আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন আরও ২৫ জন। বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) বিকেল ৫টায় আগুন লাগে হাসেম ফুড এন্ড বেভারেজের কারখানার দ্বিতীয় তলায়। ফায়ার সার্ভিস এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নিহতদের মধ্যে তিনজন হলেন, স্বপ্না রাণী (৪৪), মীনা আক্তার (৩৪) ও মোরসালিন (২৮)। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত প্রায় ১০ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি রূপগঞ্জের সেজান জুসের কারখানার আগুন। আগুন নিয়ন্ত্রণে বিভিন্নভাবে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ১৭টি ইউনিট। এদিকে নিখোঁজ শ্রমিকদের জন্য আহাজারি করছেন স্বজনরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, তৃতীয় তলা থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। পরে তা খুব দ্রুতই আগুন ছড়িয়ে পড়ে ৬তলা ভবনজুড়ে। তখন ভবনের বিভিন্ন তলায় কর্মচারী ও কর্মকর্তারা আটকা পড়ে। কেউ কেউ প্রাণ বাঁচাতে লাফিয়ে নিচে পড়ে আহত হয়।

একেক করে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিসের ১৭টি ইউনিট। কিন্তু বিভিন্ন দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে সময় লাগছে বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের অপারেশন ও মেইনটেনেন্স বিভাগের উপপরিচালক দেবাসীস রঞ্জন।

এদিকে ৬ তলা ভবনের চারতলায় বিস্কুটের কারখানায় সকাল থেকে কাজ করছিলেন ৪৭ নারী শ্রমিক। বিকেলে আগুন লাগার পর ভেতর থেকে শ্রমিকদের কাজ করতে তালা ঝুলিয়ে দেয়ায় কেউ বের হতে পারেনি বলে অভিযোগ স্বজনদের। নিখোঁজদের স্বজনরা জানান, সন্ধ্যারপর থেকে কারো সাথে কোন যোগাযোগ নেই।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সোনারগাঁ-রূপগঞ্জ জোনের উপ-সহকারী পরিচালক তানহারুল ইসলাম সময় নিউজকে জানান, হাসেম ফুড বেভারেজ কোম্পানির কারখানায় বিকেলে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। মুহূর্তের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ডেমরা, কাঞ্চন, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের ফায়ার সার্ভিসের এক ডজনেরও বেশি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা শুরু করে।

তিনি জানান, এটি একটি ফুড বেভারেজ কারখানা। এখানে জুসসহ কোমল পানীয় তৈরি করা হয়।
তানহারুল ইসলাম আরও জানান, আগুনে ওই কারখানায় অনেক শ্রমিক আটকা পড়েছেন। তাদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। তবে রাত পৌঁনে আটটা পর্যন্ত কারও কোনো মৃত্যুর খবর জানা যায়নি বলে জানান তিনি। তবে কী কারণে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ্ নুসরাত সময় নিউজকে বলেন, এসিল্যান্ড ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে আমি ঘটনাস্থলে আছি। ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। তিনি জানান, ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ইতোমধ্যে ওই কারখানার তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় আটকা পড়া ১২ শ্রমিককে উদ্ধার করেছে।